মহান আন্তর্জাতিক মে দিবস ২০১৯
মহান মে দিবস সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনই নিজ নিজ লক্ষ্যকে সামনে রেখে উদযাপন করে থাকে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই দিবসটি সবাই একসাথে পালন করা, যাতে শ্রমিকশ্রেণীর শাসন তথা শোষণমুক্তি ও সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার অভিন্ন লক্ষ্যে আমরা সবাই যুক্তি হতে পারি। আপনারা যদি এই উদ্যোগে অংশ নিতে চান তবে আমাদের ‘মহান আন্তর্জাতিক মে দিবস ২০১৯’ কর্মসূচিতে যুক্ত হতে পারেন। সেজন্য নিচের লিংকে প্রবেশ করে মেইলিং লিস্টে নিজেরদের অন্তর্ভুক্ত করে অনলাইনে আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।
মহান আন্তর্জাতিক মে দিবস ২০১৯
প্রতি বছর সারা বিশ্বে শ্রমিকরা পহেলা মে এর দিনে কর্মবিরতি ঘোষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করে। আমাদের ইচ্ছা যে পহেলা মে এর দিনে শ্রমিকশ্রেণীর প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্বের সকল সমমনা সংগঠন একই সাথে তাদের নিজ নিজ স্বতন্ত্র কর্মসূচিকে একটি অভিন্ন সংহতিপত্রের মাধ্যমে পালন করবেন। এর ফলে প্রতিটি দেশের সীমানা পেড়িয়ে শ্রমিকশ্রেণীর শাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংগ্রাম সবার কাছে দৃশ্যমান হবে। এই উদ্যোগটি সর্বপ্রথম গ্রহণ করায় “শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন” (FAU) ও “বিশ্ব কারখানা শ্রমিক ইউনিয়ন” (IWW) এর সকল কর্মী, শুভানুধ্যায়ী, সহযোগী সংগঠন ও সদস্য সংগঠনকে আন্তরিক অভিবাদন জানাচ্ছি।
এই সংহতিপত্রের মাধ্যমে শ্রমিকশ্রেণীর সাথে আপামর ছাত্রসমাজ তাদের সংহতি ঘোষণা করবে। এটা এইজন্য জরুরি হয়ে পড়েছে কারণ আমরা সবাইই নিজ নিজ দেশের নাগরিক হয়েও একটি অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলেছি। আমাদের সবার অভিন্ন সেই শত্রুটি হচ্ছে পুঁজিবাদী মুনাফালোভী তৎপরতা। আপনারা দেখবেন যে প্রতিটি দেশেই সরকারী সেবাসমূহের বাজেট কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, স্থানীয় শ্রমিকদের বঞ্চিত করে নিম্ন মজুরি দিয়ে উন্নয়নশীল দেশের শ্রমিকদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের শোষণমূলক উৎপাদনে একরকম বাধ্য করা হচ্ছে, মজুরি যথাসম্ভব কম দেওয়া হচ্ছে, জাতীয় সম্পদ বিশেষত খনিজ সম্পদকে বেসরকারী খাতে মুনাফালোভীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এর ফলে সমাজের “১ শতাংশ” এর কাছে “৯৯ শতাংশ” সম্পদ জমা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে পারছে না। শিক্ষার ব্যয় বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে জনগণ নিজেদের উন্নতি না করতে পারে। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশের নাগরিক হতে পারি, কিন্তু পুজিবাদের বিষ আমাদের সবাইকে সমানভাবেই আক্রান্ত করছে। এই পুঁজিবাদ আমাদের সবার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবসা করছে। আমাদের শোষণ করার ক্ষেত্রে কিন্তু পুঁজিবাদ দেখছে না যে আমরা কে কোন দেশের নাগরিক।
এই পুঁজিবাদ আমাদেরকে একেকজনকে একেকটা পণ্য হিসেবে বিবেচনা করছে। শিশুকাল থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদেরকে মূল্যায়িত করা হচ্ছে আমাদের সম্পদ দিয়ে, আমাদের চাকরি দিয়ে, আমরা কে কোন গাড়ি চালাচ্ছি, কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছি ইত্যাদি দিয়ে। আমাদের কাজের জায়গা, শিক্ষার জায়গা সবখানে আমাদের মধ্যে একটা অসুস্থ্য প্রতিযোগীতা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যে কে কার আগে থাকবে। অথচ আমাদের চলার কথা পাশাপাশি, একজন আরেকজনের উন্নতিতে সাহায্য করে। কিন্তু পুঁজিবাদ আমাদের শেখাচ্ছে যে একে অপরকে টপকাতে পারলে, ফেলে বা সরিয়ে দিতে পারলেই আমাদের উন্নতি। মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, সহমর্মিতা এইসবকে পুঁজিবাদ ধ্বংস করে ফেলছে।
আমরা এই পুজিবাদকে আর প্রতিরোধ করতে চাই না, আর প্রতিবাদ করতে চাই না। আমরা চাই পুজিবাদের বিনাশ।
পুঁজিবাদ যেহেতু আমাদের সবারই ক্ষতি করছে, তাই এর বিরুদ্ধে আমাদের সকলেরই এক হতে হবে। একবার শুধু কল্পনা করে দেখুন যে কোন বহুজাতিক কোম্পানির শোষণমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে যদি শুধু একটি দেশের শ্রমিকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে সেই কোম্পানির বাজারভুক্ত প্রতিটি দেশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে তাহলে তার ফলাফল কি হতে পারে? এমন ঐক্য আর সংহতি অতীতে থাকলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অনেক শোষণমূলক কর্মকান্ডকে আমরা রুখে দিতে পারতাম। এটি কিন্তু শুধু কল্পনা নয়, একবার মনে করে দেখুন ২৭ নভেম্বর ২০১৮ সালের কথা। এইচ এন্ড এম কোম্পানীর শ্রীলংকায় অবস্থিত কারখানার শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দাবির বিক্ষোভে যখন আমেরিকা আর ইউরোপের শ্রমিকরা একাত্মতা ঘোষণা করে রাস্তায় নেমে পড়লো তখন কিন্তু এই পুঁজিবাদী কোম্পানিটি ঠিকই তাদের দাবী মেনে নিতে বাধ্য হলো। আমরা দেখেছি যে অ্যামাজন, গুগলের বিরুদ্ধে তাদের নিয়োজিত এক দেশের শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অন্য দেশের শ্রমিকরাও রাজপথে নেমে দাবী আদায় করেই তবে ঘরে ফিরেছে।
বর্তমান এই সময়ে পুঁজিবাদের পতাকাবাহী সন্তানেরা হচ্ছে উগ্র জাতীয়তাবাদ আর বর্ণবাদ। তারা সারা বিশ্বে পুজিবাদের দোসর হিসেবে তান্ডব চালাচ্ছে। এই অবস্থায় শ্রমিকশ্রেণী ও শ্রমিকশ্রেণীর বন্ধুদের এক হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আসুন সবার সুন্দর জীবন আর সমান অধিকারের আন্দোলনে আমরা সবাই এক হয়ে মহান মে দিবসে সংহতি প্রকাশ করি আর পুজিবাদের বিনাশে কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত রেখে সংগ্রামে এগিয়ে চলি।
দুনিয়ার মজদুর এক হও!
#1world1struggle
#আমাদের_পৃথিবী_আমাদের_সংগ্রাম

_____
To facilitate translation of the call this pad was set up.
_____
Initial supporters of this call:
Bangladesh Anarcho-Syndicalist Federation | Free Workers’ Union (FAU) Hamburg | Inter-Factory Workers’ Federation (FBLP) Jakarta | Forum for IT Employees (FITE) India | Garment Workers’ Trade Union Center (GWTUC) Bangladesh | Industrial Workers of the World (IWW) Gainesville | Industrial Workers of the World (IWW) Hamburg